কারাগারে মৃত্যুবরণ করা লেখক মুশতাক আহমেদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শাহবাগে অনুষ্ঠিত এ জানাজায় ইমামের দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় ছাত্র অধিকার পরিষদের আয়োজনে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় অংশগ্রহণ করেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, রাষ্ট্রচিন্তার হাসনাত কাইয়ুম, সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খাঁনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যক্তিরা।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করলে হবে না, এই হত্যার বিচার করতে হবে। এই হত্যায় যদি আপনি (শেখ হাসিনা) জড়িত থাকেন, আপনারও বিচার হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আপনি নিজেও বন্দি, তাই আপনি সত্যি কথা বলতে পারেন না। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে আটক হওয়া প্রত্যেকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেন। এই আইন বাতিল করুন। না হয় আপনাকেও এক দিন এই আইনের মারপ্যাঁচে পড়তে হবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বিনা বিচারে ১০ মাস পর্যন্ত তাকে (মুশতাক আহমেদ) কারাগারে রাখা হয়েছে, ছয় বার জামিনের আবেদন নাকচ করেছে। জেলে রেখেই এই সরকার তাকে হত্যা করেছে। ভোটারবিহীন সরকার থেকে আর কী আশা করা যায়?
প্রধানমন্ত্রী আপনাকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশে আজ যা অন্যায় হচ্ছে এর দায় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে নিতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ যে দিন জেগে উঠবে, সেদিন কেউ পালাতে পারবেন না। আপনাদের সবাইকে জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এই ডিজিটাল আইনে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়েছেন এ দেশের সাংবাদিক এবং লেখকরা। ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে।
এই হত্যার দায় প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে। আজ আমরা সবাই যদি আওয়াজ তুলতে না পারি, তাহলে আমাদের অবস্থাও লেখক মুশতাকের মতো হবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে র্যাবের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।