ইংরেজি নববর্ষ থার্টি ফার্স্ট নাইটে ডিজে পার্টি নয়: ডিএমপি

প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০২০

ইংরেজি নববর্ষ থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে কোনো ডিজে পার্টি করা যাবে না বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো পার্টি করা যাবে না।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে সোমবার বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার মহামারির কারণে সীমিত আকারে অনুষ্ঠানাদি পালন করা হচ্ছে। ব্রিটেনে অনেক লোক ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ায় গ্রেড-৪ লকডাউন চলছে। বাংলাদেশেও সকল প্রকার অনুষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে পালিত হচ্ছে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, বড়দিন উপলক্ষে গির্জায় (চার্চ) সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। সেইসঙ্গে অতিরিক্ত নজরদারি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকা ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে। চার্চগুলোতে এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সময়ে একাধিক প্রার্থনা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হলে ভালো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে লোক সমাগম ও কোনো পার্টি করা যাবে না। ডিজে পার্টির নামে হোটেলে কোনো স্পেস ভাড়া দেওয়া যাবে না। তবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হোটেলগুলোতে সীমিত আকারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। কোনো ক্রমেই ডিজে পার্টি করা যাবে না। হোটেলগুলোতে অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণে রাস্তায় যেন অতিরিক্ত যানজটের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা যাবে না বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।

তিনি আরো বলেন, থার্টি ফার্স্টে সন্ধ্যা থেকেই বারগুলো বন্ধ থাকবে। দোকান-পাট খোলা রাখা যাবে সামাজিক দূরত্ব ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে। তবে সকল ফার্স্টফুডের দোকানসহ মার্কেট যথারীতি রাত ৮টার পর বন্ধ থাকবে।

বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইট সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সমন্বয় সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেমন- প্রতিটি চার্চে পোশাক পরিহিতের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। আর্চওয়ে দিয়ে প্রতিটি চার্চে দর্শনার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হবে। ম্যানুয়াল ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে। ডগস্কোয়াড দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল সুইপিং করা হবে। এ ছাড়া নিরাপত্তায় থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।

এ ছাড়া চার্চ এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। কোনো ভাসমান দোকান বা হকার চার্চ এলাকায় বসতে দেওয়া হবে না। চার্চে প্রবেশের সময় কোনো প্রকার ব্যাগ, পোটলা, বাক্স, কার্টন ইত্যাদি থাকা যাবে না।

অন্যদিকে, প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশপথে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা, জীবাণুনাশক অটোস্প্রে মেশিন বা টানেল বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

চার্চের ফাদার, দায়িত্বরত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। অনুষ্ঠানস্থলে একমুখী চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুদের অনুষ্ঠানে আসতে নিরুৎসাহিত করতে হবে।

এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি ও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায় ও বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা।

আই.এ/

মন্তব্য করুন