ইসমাঈল আযহার: বাংলাদেশের সর্ববৃহত ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও শতবর্ষী পুরনো ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব, বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি, বারিধারা জামিয়ার পরিচালক বাংলাদেশের প্রবীণ ও প্রভাবশালী আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী কিশোর বয়স থেকেই ইবাদাত প্রিয় ছিলেন।
ইসলামী বিধিবিধানের প্রতি তার ঝোঁক বরাবর অবাক করার মতো ছিল। বৃদ্ধ বয়সে হুইল চেয়ার দিয়ে চলাচলকারী তিনি যেভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতেন তা যে কাউকে অবাক করবে।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ. শায়খুল হাদীস যাকারিয়া রহ. এর কাছে প্রথমে বায়আত গ্রহণ করেন। তার সাথে রমজানে ইতেকাফ করেন। তখন তিনি মুরাদিয়া মাদরাসায় অধ্যাপনার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
শায়খুল হাদীস যাকারিয়া রহ. ইন্তেকালের পর মুফতী মাহমুদুল হাসান গাঙ্গুহী রহ. এর হাতে পুনরায় বায়আত গ্রহণ করেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। এরপর ১৯৯৫ সালে মুফতী মাহমুদুল হাসান গাঙ্গুহী রহ বাংলাদেশে আসেন। মালিবাগ জামিয়ায় ইতেকাফ করেন। ইয়ারপোর্ট মাদরাসায় অবস্থানকালে তার কাছ থেকেই ১৯৯৫ সালে খেলাফত লাভ করেন আল্লমা কাসেমী রহ.।
আল্লামা কাসেমী একজন দেওবন্দী মাসলাকের আলেম। সর্বদা সুন্নাতের অনুসরণ ও আকাবির আসলাফের দেখানো পথে চলেন। সাদাসিধে জীবনযাপন ছিলো তার ঐকান্তিক ব্রত। রাসূলুল্লাহ সা. এর হাদীসের খেদমাত আর সমাজে ইলমে দ্বীন পৌঁছে দেয়ার জন্য সর্বদা মগ্ন ছিলেন এ রাহবার।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর রহ. এর নিকট হজার হাজার মানুষের মুরীদ হওয়ার চাহিদা এবং অনেক পীড়াপীড়ির পরও তিনি বিষয়টিকে এড়িয়ে যান। কাউকে মুরীদ বানাতে আগ্রহী দেখানোতো অনেক দূরের বিষয়। তবে তার কাছে কেউ মুরীদ হতে এলে তিনি মুফতি মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী রহ. এর জানেশ্বীন মুফতি ইব্রাহীম আফ্রিকী দা.বা. এর কাছে পাঠিয়ে দিতেন।
প্রচারবিমূখ এ আধ্যাত্মিক রাহবার আল্লামা কাসেমী তেমন কাউকে খেলাফত দেননি। তিনি খেলাফত লাভ করেছেন প্রায় ২১ বছর পূর্বে। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়ে মাত্র ৩ জন আলেমকে খেলাফত দিয়েছেন। তারা হলেন গাজীপুরের মাওলানা মাসউদুল করীম, সৈয়দপুরের মাওলানা বশির আহমদ ও মানিকনগরের মাওলানা ইছহাক।
রাজধানী ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টা ১৫ মিনিটে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাইহী রাজিয়ুন)
আই.এ/