সরকার বসে থাকবে না; ভাস্কর্য বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিলেন তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২০

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য অনবরত দিতে থাকলে, বিরোধীদের বিরুদ্ধে সরকার নিশ্চয় বসে থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

আজ সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে এবং এটা আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। কিন্তু একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে সমাজকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ ইসলামি দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, সেখানেও ভাস্কর্য আছে। আর সেটা নিয়ে কেউই কিছু বলছে না।

তিনি বলেন, ইরানে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ভাস্কর্য, ইরাকে রাস্তায় রাস্তায় ভাস্কর্য এবং তুরস্কে এরদোয়ানের ভাস্কর্য আছে। বিশ্বের অন্য ইসলামিক দেশ যেমন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রাস্তায় রাস্তায় ভাস্কর্য আছে। সৌদির জেদ্দাসহ বিভিন্ন শহরে ঘোড়া, উটসহ সৌদি প্রশাসকদের ছবি সংবলিত ভাস্কর্য আছে, জেদ্দায় বিশ্বের বিখ্যাত ভাস্কর্য দিয়ে স্কাউচার মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে। যেখানে নারী-পুরুষ, জীবজন্তুসহ বহু কিছুর ভাস্কর্য আছে, এমনকি মাওলানা রুমিসহ বহু স্কলারের ভাস্কর্য আছে।

তিনি আরও বলেন, ভাস্কর্য একটি দেশের ইতিহাস, কৃষ্টি কালচারের অংশ দাবি করে তিনি বলেন, এসব দেশে এমনকি সৌদি আরবেও ভাস্কর্য নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। যারা প্রশ্ন তুলছেন তাদের পূর্বপুরুষরা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের জন্য এবং পক্ষে লড়াই করেছিলেন। সেই পাকিস্তানেও কায়েদে আজম, লেয়াকত আলীর ভাস্কর্য আছে। সেখানে এটা নিয়ে কারোরই বিরোধ নেই।

এখন এটি নিয়ে প্রশ্ন করা মানে, জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষে ইংরেজরা আসার আগে সরকারি ভাষা ছিল ফার্সি এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে উর্দু ভাষা চালু ছিল। এরপর ইংরেজরা ক্ষমতা গ্রহণ করে ইংরেজিকে সরকারি ভাষা করে। অনেকে সে সময় ইংরেজি শিক্ষা হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন। মানুষ যখন চাঁদে গেল তখন ফতোয়া দিয়েছিল, বিশ্বাস করা হারাম, করলে শিরক হবে। আবার যখন টেলিভিশন চালু হলো, তখন সেটিকেও হারাম বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এমনকি ছবি তোলা নিয়েও বিতর্ক করা হয়।

হামান মাহমুদ বলেন, আর সেই লোকগুলোই এখন টেলিভিশনে বক্তব্য দেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গেলে খুশি হন। আসলে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য বিভ্রান্তি ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সমাজকে বিভ্রান্ত করতে চায়। তাদের এই ধরনের বক্তব্য পরিহার করতে হবে। কারণ জনগণ কখনই এসব মেনে নেয়নি এবং নেবেও না। এই দেশে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের স্থান নেই, যোগ করেন তিনি।

আই.এ/

মন্তব্য করুন