আফগান যুদ্ধে অবৈধভাবে ৩৯ বেসামরিককে হত্যার দায় স্বীকার করলো অস্ট্রেলিয়া। বৃহস্পতিবার ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী।
যুদ্ধে নয়, ঠান্ডা মাথায় সাধারণ আফগান এবং যুদ্ধবন্দিদের হত্যা করেছিল অস্ট্রেলিয়ার এলিট আর্মি। সম্প্রতি সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সেনা। সেনা বাহিনীর উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনার জন্য তাঁরা অত্যন্ত দুঃখিত। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষীরা শাস্তি পাবেন।
বস্তুত, ঘটনাগুলি কোনোদিন জনসমক্ষে আসতোই না। বছরকয়েক আগে অস্ট্রেলিয়া সেনাবাহিনীর সদর দফতর থেকে কিছু ফাইল ফাঁ,স হয়ে যায়। আফগান ফাইল নামে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে তার তথ্য। তাতেই দেখা যায়, সাধারণ মানুষের উপর কী ভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার এলিট ফোর্সের কিছু সেনা। তারপরেই তদন্ত শুরু হয়। এবং সত্য প্রকাশ্যে আসে।
চার বছরের তদন্ত শেষে রিপোর্ট প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী- এডিএফ (ADF)। দাবি- ৩০০ প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দির ভিত্তিতে প্রমাণিত হলো সেনাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ।
২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কারাবন্দি, কৃষক ও সাধারণ আফগানিদের হত্যার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। যাদের মধ্যে, বর্তমানে ১৯ জন এখনো সেনাবাহিনীতে কর্মরত; বাকি ছ’জন নিয়েছেন অবসর। দেশের সর্বোচ্চ আইন অনুসারে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার নিশ্চয়তা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
এরইমধ্যে, আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির কাছে টেলিফোনে ‘গভীর দুঃখপ্রকাশ’ করেছেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
অস্ট্রেলিয়া প্রতিরক্ষা প্রধান আঙ্গুস ক্যাম্পবেল জানান, অস্ট্রেলিয়া এলিট ফোর্সের বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ চলাকালে বেসামরিক স্থাপনায় হামলা-হত্যার ৫৭টি অভিযোগ তোলা হয়েছিলো। যারমধ্যে, ২৩টি প্রমাণিত; প্রাণ হারান ৩৯ জন।
এরসাথে, স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্টের ২৫ সদস্যের সম্পৃক্ততা মিলেছে। আফগানিস্তানের কাছে এরজন্য অস্ট্রেলীয় সরকার ক্ষমাপ্রার্থী। অনৈতিক রক্তপাতের জন্য সেনাদেরও করা হবে জবাবদিহির মুখোমুখি।