ফরাসি দূতাবাস অভিমুখে হেফাজতে ইসলামের গণস্রোত

প্রকাশিত: ১২:৩৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২০

ইসমাঈল আযহার
পাবলিক ভয়েস

ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে মহানবী (সা.)-এর অবমাননা করার প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে ঢাকার ফরাসি দূতাবাস অভিমুখে হেফাজতে ইসলামের মিছিল শুরু হয়েছে। নেতাদের বক্তব্যের পর দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে এই মিছিল শুরু হয়।

মহানবী সা. কে নিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে অবমাননা করায় ফ্রান্সের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। সাথে সাথে ওয়াইসিকে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনানারা আপনাদের দোকান থেকে ফ্রান্সের পণ্য ফেলে দিবেন, এটা আপনাদের ইমানের দায়িত্ব। পাশাপাশি যারা রাসূলের শানে বেয়াদরি করবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন তিনি।

Image may contain: one or more people, crowd and outdoor

ফ্রান্স সরকার মুসলিমদের নিকট ক্ষমা না চাইলে কাফন পরে রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজত নেতা আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব।  এ সময় নবীপ্রেমিক তৌহিদী জনতা হাত তুলে এই আন্দোলনে গড়ে তুলতে ওয়াদাবদ্ধ হন।

হাজী শরিয়াতুল্লাহর সপ্তম পুরুষ পীর আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ হাসান বলেছেন, ফ্রান্স সরকার তার কর্মকাণ্ড থেকে ফিরে না আসলে এবং মুসলিমদের নিকট নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে অচিরেই হাজী শরিয়াতুল্লাহর কেল্লা থেকে আবারও যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে।

Image may contain: one or more people, crowd and outdoor

বেফাকের মহাসচিব মাহফুজুল হক বলেন, নবীর ইজ্জত পুরো বিশ্বের মুসলিমদের চেয়ে দামী। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ গোটা মুসলিম বিশ্বের কাছে ক্ষমা না চাইলে এরচেয়েও ভয়াবহ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা ও তাদের বয়কট করা মুসলিমদের ঈমানের দায়িত্ব।

ফ্রান্সে রাসূল সা. এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের ঘটনায় ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মাদ্রাসাছাত্র, শিক্ষক ও সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার গণজোয়ারে উত্তাল ঢাকার রাজপথ।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ আশপাশের এলাকায় নবীপ্রেমিকদের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। স্লোগানে স্লোগানে লক্ষ লক্ষ মানুষ দূতাবাস ঘেরাও করতে আন্দোলনে যোগদান করেছেন।

Image may contain: outdoor

বায়তুল মোকাররমে বেলা ১১টা থেকে কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই শুরু হয়েছে আন্দোলন। দলের একজন নেতা তার বক্তব্যে বলেন, হেফাজতে ইসলাম হারিয়ে যায়নি। হেফাজত ছিল, আছে এবং আগামীতেও থাকবে।

এদিকে ফেসবুক লাইভে এসে হেফাজত নেতা আল্লামা মামুনুল হক দাবি করেছেন হেফজতের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। যাদের যেখানে বাধা দেওয়া হচ্ছে তাদেরকে সেখানেই গণআন্দোলন শুরু করতে বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে এক মুসলিম শিক্ষার্থী কর্তৃক একজন অসভ্য ইতিহাসের শিক্ষককে হত্যার পর থেকেই উত্তপ্ত ফ্রান্স। ওই ঘটনার পর অন্তত ৫০টি মসজিদ ও মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায় ভয়াবহ অভিযান চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।

মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তার এ ঘোষণায় মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। ইসলামের প্রতি এমন মানসিকতার জন্য ম্যাক্রোঁর মানসিক চিকিৎসা দরকার বলে মন্তব্য করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। মুসলিম দেশগুলোতে ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হয়। জানানো হয় তুমুল প্রতিবাদ।

আই.এ/

মন্তব্য করুন