নৌপথে সন্ত্রাস বন্ধ, বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ১১ দফা দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সোমবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশব্যাপী পণ্যবাহী নৌ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। তবে ধর্মঘটের আওতামুক্ত আছে যাত্রীবাহী নৌযান।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আওতাধীন আটটি সংগঠন এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তবে নৌ শ্রমিকদের সব দাবি এখনই মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন নৌযান মালিকরা। শ্রমিকরা ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়ার পর বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সোমবার বিকালে বৈঠকে বসে শ্রমিক-মালিকরা। মধ্যরাত পর্যন্ত দীর্ঘ বৈঠক চললেও সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান দুই পক্ষই নিজ নিজ দাবিতে অনড় থাকায় সমঝোতা হয়নি। নৌশ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম বলেন, ‘আমরা যে দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি সেগুলো পূর্বনির্ধারিত। করোনার কারণে এতদিন চুপ ছিলাম। শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন তো সবকিছু স্বাভাবিক। তাই আমরা আমাদের দাবিতে ধর্মঘট শুরু করতে যাচ্ছি।’
নবী আলম আরও বলেন, ‘গত নভেম্বরেও আমরা আন্দোলন শুরু করার পর সরকার ও মালিকদের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হলো- দাবি মানা হবে। কিন্তু তারা ওয়াদা ভঙ্গ করেছে, তাই ধর্মঘটে বাধ্য হয়েছি। এবার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার করব না।’ যেসব নৌযান বিকালে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দিয়েছে, সেগুলো গন্তব্যে পৌঁছানোর পর নোঙর করা থাকবে বলেও জানান তিনি।
মালিকদের দাবি, খাদ্যভাতা ছাড়া বাকি ১০টি দাবি মেনে নিয়েছেন তারা। তবে শ্রমিকরা বলছেন, দাবি না মানায় ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন তারা।
শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবিগুলো হলো- বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি-ডাকাতি বন্ধ করা, ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান, সব নৌযান শ্রমিকের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ, এনডোর্স, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ, প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান, নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন, মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও নবায়ন, বেআইনি নৌচলাচল বন্ধ করা, নৌপরিবহন অধিদপ্তরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ এবং নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ওয়াইপি/পাবলিক ভয়েস