রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় দীর্ঘ দশ ঘণ্টা আলোচনার পর আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটা সমঝোতা হয়েছে। এরপরও টানা দুই সপ্তাহ ধরে বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে যে যুদ্ধ হয়ে গেল- তা সামরিক বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বিশেষ একটা কারণে।
দীর্ঘ তিন দশক ধরে পুরনো যে সংঘাত থেকে থেকেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, তাতে এবারের লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে তুরস্কের তৈরি অত্যাধুনিক ড্রোন। এবারের লড়াই, যা শুরু হয়েছিল গত ২৭ সেপ্টেম্বর। তার তীব্রতা বুঝিয়ে দিয়েছে নাগোরনো-কারাবাখে আর্মেনীয় লক্ষ্যবস্তুর ওপর আজেরি ড্রোন হামলার ভিডিও ফুটেজ। এই ভিডিও ছবি থেকে সন্দেহ দানা বেঁধেছে যে এবারের লড়াইয়ের জন্য আজারবাইজানের হাতে এসেছিল তুরস্কের বেয়ারআকতার ড্রোন।
আজেরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পর্যবেক্ষণ ড্রোন থেকে তোলা এলাকার ছবি বিতরণ করেছে, যেখানে লক্ষ্যবস্তুর অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং সেখানে চালকবিহীন ‘কামিকাযি’ কায়দার বিমানের ভিডিও দেওয়া হয়েছিল। কামিকাযি হল একধরনের আত্মঘাতী বিমান-যেগুলো বিস্ফোরক অস্ত্রে সজ্জিত থাকে এবং লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত করে নিজেই বিস্ফোরিত হয়ে যায়।
সম্প্রতি দুটি দেশই তাদের অস্ত্রের সম্ভার বাড়িয়েছে। এর মধ্যে আজারবাইজান অস্ত্র সংগ্রহ করেছে আর্মেনিয়ার চেয়ে বেশি এবং আজেরিরা ড্রোন প্রযুক্তির দিকে বেশি ঝুঁকেছে।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আজারবাইজান ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে এবং দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিকতম এই লড়াইয়ে যে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে সেটি হল তুরস্কের বেয়ারআকতার টিবি-টু মডেলের ড্রোন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাগোরনো-কারাবাখে আজেরি সামরিক বাহিনীর হামলার যেসব ভিডিও দেশটির সরকার বিলি করেছে তা ফিল্ম করা হয়েছে টিবি-টু ড্রোন দিয়ে। কয়েক বছর আগে বেকার নামে তুরস্কের একটি সংস্থা এই ড্রোন তৈরি করে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে এবং এটি পর্যবেক্ষণ ও লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণের কাজে ব্যবহার করা যায়।
ড্রোনের বাজারে টিবি-টু একটি তারকা। ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে সিরিয়ায় অপারেশন স্প্রিং শিল্ড অভিযানে এই ড্রোন ব্যবহার করেছিল তুরস্ক।তুরস্ক টিবি-টু বিক্রি করেছে ইউক্রেনের কাছে। ৬ অক্টোবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক খবরে বলা হয়েছে যে সার্বিয়াও এই ড্রোন কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে।
আই.এ/