নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার বিদ্যমান সংঘাত উত্তরণে দেশ দু’টির সঙ্গে ত্রিমুখী বৈঠকের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ব্যাপারে উভয় দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) রুশ সংবাদমাধ্যম ইন্টার ফ্যাক্সের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এবার ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্ককে ছাড়াই আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার সঙ্গে ত্রিমুখী বৈঠকের পথে হাঁটছে রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে মস্কোতে সম্ভাব্য বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
এ দিকে আর্মেনিয়াসহ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত পাঁচ দেশের সঙ্গে রাশিয়ার যে চুক্তি রয়েছে, কারাবাখের ক্ষেত্রে সেটি কার্যকর নয় বলেও দাবি মস্কোর। বুধবার (৭ অক্টোবর) রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ তার দেশের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।
আর্মেনিয়া রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সিএসটিও সামরিক জোটের সদস্য। এ জোট বাইরের আগ্রাসন থেকে সদস্য দেশগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারাবাখের ক্ষেত্রে এ জোট বা চুক্তি কার্যকর নয়।
মিত্র আর্মেনিয়ার সমর্থনে কারাবাখে রুশ সেনা পাঠানো সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ওই চুক্তিতে কোনো সদস্য দেশ বাইরের আক্রমণের শিকার হলে তার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এখানে আমরা আর্মেনিয়ার সঙ্গে কথা বলছি। প্রেসিডেন্ট পুতিন বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন।
ইতোপূর্বে পুতিন বলেছেন, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যে সংঘাত চলছে তা আর্মেনীয় ভূখণ্ডে নয়।
রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সিএসটিও জোটের সদস্যপদ ছাড়াও আর্মেনিয়ায় একটি রুশ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। অন্য দিকে মুসলিম দেশ আজারবাইজানকে জোরাল সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তাহলে রাশিয়া ও তুরস্কের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলোও এতে যুক্ত হতে পারে।
আর্মেনিয়ার প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন থাকলেও দৃশ্যত এ ইস্যুতে সরাসরি সংঘাতে না জড়ানোর বদলে একটি মধ্যস্থতার প্রচেষ্টায় নিজেকে যুক্ত করার ইঙ্গিত দিল মস্কো।
কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখণ্ড হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। মূলত এ নিয়েই সংঘাতের সূত্রপাত।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘ বিবাদের জেরে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কার্যত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। এতে এখন পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ উভয় পক্ষের শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
নিহতদের বেশিরভাগই আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে জানা গেছে। নতুন করে সংঘাতের জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া।
আই.এ/